মোঃ জসিম মিয়া চুনারুঘাট প্রতিনিধিঃ
হবিগঞ্জের কালেঙ্গা রেঞ্জের রশিদপুর“বন ও বন্যপ্রাণী, পরিযায়ী পাখি ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং শুষ্ক মৌসুমী বনাঞ্চলে আগুন প্রতিরোধে সচেতনতা”—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে হবিগঞ্জের কালেঙ্গা রেঞ্জের রশিদপুর বিটের গরমছরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি সচেতনতামূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সিলেট বন বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কালেঙ্গা সিএমসি’র সভাপতি আবুল হাসেম সরকার এবং সহ-সভাপতি ইখলাস মিয়া।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হবিগঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (ACF) মো. জয়নাল আবেদীন। তিনি বলেন, “বন্যপ্রাণী শিকার আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। যারা এসব অপরাধে জড়িত, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। বন ও বন্যপ্রাণী মানুষের জীবনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত—তাই সিপিজি সদস্য ও ভিলেজারদের একযোগে কাজ করতে হবে।তিনি শুষ্ক মৌসুমে আগুন প্রতিরোধে স্থানীয়দের তাৎক্ষণিক উদ্যোগ গ্রহণ ও বন বিভাগকে দ্রুত তথ্য প্রদানের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কালেঙ্গা বিট কর্মকর্তা মো. আল আমিন, ছনবাড়ি বিট কর্মকর্তা মো. তিতুমীর পাঠান এবং পরিবেশকর্মী রবি কস্তা। স্বাগত বক্তব্য দেন রশিদপুর বিট কর্মকর্তা রিজভী বিশ্বাস। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কালেঙ্গা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আব্দুল খালেক।মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করতে গিয়ে পরিবেশকর্মী রবি কস্তা বলেন, “শুষ্ক মৌসুমে বনাঞ্চলে আগুন ভয়াবহ হুমকি তৈরি করে। একটিমাত্র অসতর্কতা পুরো বনভূমিকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিতে পারে—ঝুঁকিতে পড়ে পরিযায়ী পাখি, হাতি, বাঘসহ অসংখ্য বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল।” তিনি গ্রামভিত্তিক ‘আগুন প্রতিরোধ দল’ গঠন ও আগুন নিয়ন্ত্রণ প্রশিক্ষণের উপর গুরুত্ব দেন।পরিবেশকর্মী মো. খালেক মিয়া বলেন, “জীববৈচিত্র্য রক্ষায় স্থানীয় জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।
প্রতি বছর যদি শতাধিক পরিযায়ী পাখি বিলুপ্ত হয়, কৃষি ব্যবস্থা থেকে খাদ্যশৃঙ্খল—সব কিছুই বিপর্যস্ত হবে।” তিনি সামাজিক বনায়নের উপকারভোগীদের ‘বন রক্ষক’ কর্মসূচির আওতায় আনতে প্রস্তাব করেন।সভায় সিএমসি সদস্য, ভিসিএফ সদস্য, সামাজিক বনায়নের উপকারভোগী, পিপলস ফোরামের সদস্যসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা গ্রামে গ্রামে আগুন প্রতিরোধ, পরিযায়ী পাখি শিকার বন্ধে প্রচারণা, বন্যপ্রাণী সুরক্ষা ও বন রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান,সভা শেষে উপস্থিত সবাই বন সংরক্ষণে একযোগে কাজ করার দৃঢ় প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।