বিশেয প্রতিনিধি_আব্দুল কাইয়ুম
নবীগঞ্জ পৌরসভার পূর্ব তিমিরপুর এলাকার জলিখা বেগমের খোয়া গেছে ৪৬ হাজার টাকা। অজ্ঞাতনামা প্রতারক চক্রের সদস্য গত ২০ আগস্ট বিকেলে ০১৩৩৭….৩১ নম্বর থেকে ভুক্তভোগী জলিখা বেগমের মোবাইলে কল দেয়। মোবাইলের ওপাশের ব্যক্তি নিজেকে ব্যাংক কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘ভুক্তভোগীর প্রাইম ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১৫ হাজার টাকা জমা হবে। এ কথা বলে ওই প্রতারক ভুক্তভোগীর মোবাইল নম্বরে পাঠানো ওটিপি কৌশলে নিয়ে নেয়। পরে নিমেষেই জলিখা বেগমের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে থাকা ৪৬ হাজার টাকা উধাও হয়ে যায়। তারপর তিনি নবীগঞ্জ থানায় জিডি করেন। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি।’
নবীগঞ্জ শহরের বাসিন্দা শাহ আলম জানান, গত ৫ আগস্ট অচেনা মোবাইল নম্বর থেকে কল দিয়ে জানায়- বিকাশ রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছে। বিকাশ অ্যাকাউন্ট সচল রাখতে হলে ছয় সংখ্যার একটি ওটিপি গেছে, সেটি তাড়াতাড়ি দেওয়ার জন্য। ওটিপি দেওয়া মাত্র তার বিকাশের সব টাকা নিয়ে যায় ওই প্রতারক। তারপর বারবার কল দিলেও প্রতারকের মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
চুনারুঘাট উপজেলার আছিয়া বেগম চলতি মাসের এক তারিখে ওটিপির ফাঁদে পড়েন। তার বিকাশ থেকে ১১ হাজার পাঁচ শ টাকা প্রতারকরা নিয়ে যায়।এদিকে ওটিপি ফাঁদ ছাড়াও একটি প্রতারক চক্র সাধারণ মানুষের সরলতাকে কাজে লাগিয়ে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিচ্ছে। চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল সকালে হবিগঞ্জ শহরের নোয়াবাদ এলাকার প্রবাসী বায়জীদ মিয়া সৌদি আরবে গুরুতর অসুস্থ, হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এ কথা তার ভাই কাওসার মিয়াকে জানায়। পরে কৌশলে তার কাছ থেকে ৪৩ হাজার টাকা নেয় প্রতারক চক্রটি।
এ ছাড়া চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় হবিগঞ্জ শহরের বদিউজ্জামান খান সড়কের বিকাশ ব্যবসায়ী ইদু মিয়ার কাছ থেকে সার্কেল এএসপির পরিচয় দিয়ে ১ লাখ ৭১ হাজার ৫০০ টাকা হাতিয়ে নেয় একটি চক্র। প্রতারিত দুজন থানায় জিডি করেন।
হবিগঞ্জ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি, শিশু আদালত) হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে একাধিক চক্র হবিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার সাধারণ মানুষের সঙ্গে ডিজিটাল প্রতারণা করে আসছে। মহিলাদের সবচেয়ে বেশি প্রতারণার ফাঁদে ফেলছে। বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করে আসছে একাধিক চক্র। এ জন্য ব্যাপক হারে সংশ্লিষ্টদের সচেতনতামূলক প্রচারণা করতে হবে।হবিগঞ্জ সদরের সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক শাহনুর মিয়া বলেন, ‘ওটিপি হলো ওয়ানটাইম পিনকোড। এটা কাওকে শেয়ার করা যাবে না। তাহলেই প্রতারকেরা আর প্রতারণা করতে পারবে না। জনসচেতনতায় শহর থেকে গ্রামে এই তথ্য ছড়িয়ে দিতে হবে।’হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এ এন এম সাজেদুর রহমান বলেন, ‘আমরা এই ডিজিটাল প্রতারক চক্রকে আইনের আওতায় আনতে কাজ করছি। বিকাশে প্রতারণার স্বীকার বেশ কিছু ভুক্তভোগীর টাকা ইতিমধ্যে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে জেলা পুলিশ। তবে এসব ব্যাপারে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সচেতন হতে হবে।’